আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহর ভয়াবহ দাবানলের আগুনে জ্বলছে। হাজার হাজার একর এলাকাজুড়ে ভয়ংকর অগ্নিঝড় বয়ে যাচ্ছে। শত শত বাড়িঘর পুড়ে তছনছ হয়ে গেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। কেন এলো এই দুর্যোগ?
দুর্যোগ ও বালা মুসিবত সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে আলোচনা করা হয়েছে। পবিত্র কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন, মানুষের কৃতকর্মের কারণে স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় প্রকাশ পায়, যার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করান, যাতে তারা সুপথে ফিরে আসে। (সুরা রোম : ৪১)
গভীরভাবে লক্ষ করলে আয়াত থেকে দুটি বিষয় ফুটে ওঠে—এক. বালা মুসিবত আসার কারণ। দুই. বালা মুসিবত আসার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য।
বালা মুসিবত আসে মানুষের অন্যায় অপকর্মের কারণে। মানুষ যখন পাপাচারে ও আল্লাহর অবাধ্যতায় ডুবে যায়, তখন নেমে আসে আল্লাহর আজাব। দুর্যোগ ও বালা মুসিবতে মানুষকে ধ্বংস করা বা সমূলে মূলোৎপাটন করা উদ্দেশ্য থাকে না। আয়াতে বালা মুসিবত আসার দুটি উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হয়েছে। একটি হলো পাপের কিছু শাস্তি দুনিয়াতে ভোগ করানো। আখেরাতের শাস্তি তো অত্যন্ত ভয়াবহ। সেই তুলনায় দুনিয়ার শাস্তি অত্যন্ত কম। দুনিয়াতে শাস্তি দেওয়া বান্দার প্রতি আল্লাহর করুণার নিদর্শন। আল্লাহ তায়ালা হলেন দয়ালু। এক অপরাধে তিনি দুনিয়াতে শাস্তি দেওয়ার পর আখেরাতেও শাস্তি দেবেন, এটা কল্পনা করা যায় না।
আয়াত থেকে বালা মুসিবতের দ্বিতীয় যে উদ্দেশ্য বোঝা যায়, তা হলো সামান্য এই শাস্তি দেখে যেন মানুষ আল্লাহর নির্দেশিত পথে ফিরে আসে। এটিও বান্দার প্রতি আল্লাহর অসামান্য ভালোবাসা ও অনুগ্রহের বহিঃপ্রকাশ। সন্তানের প্রতি যখন বাবার আস্থা, ভরসা ও ভালোবাসা থাকে, তখন বাবা শাসন ও ধমকের মাধ্যমে সন্তানের ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দেয়। সন্তানকে সতর্ক করে এবং সঠিক পথে পরিচালিত করে। কিন্তু যে সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসা থাকে না, তার ব্যাপারে বাবার কোনো আগ্রহ থাকে না। আল্লাহ তায়ালাও বান্দাকে বিভিন্ন দুর্যোগের মাধ্যমে সতর্ক করেন। সঠিক পথে ফিরে আসার উপলক্ষ তৈরি করে দেন।